ঐক্যের শক্তি এবং বিভাজনের বিপদ: আমাদের সমাজের বাস্তবতা

আজকের বাংলাদেশ আর কয়েকদিন আগের বাংলাদেশের মধ্যে পার্থক্য দেখছেন? আমরা এখন অনেক বড় সমস্যাগুলো সকলে মিলে সমাধান করছি। নিজেদের জীবন বাজি রেখে অন্যের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়ছি—কোনো দ্বিধা নেই। এটা আমাদের শক্তি, আমাদের ঐক্য। কিন্তু এই একতার মাঝেও কিছু জিনিস দেখলাম যেগুলো খারাপ লেগেছে।

এই বিপদের সময়ে কিছু মানুষ পণ্যের দাম বাড়িয়েছেন, বোটের ভাড়া বাড়িয়েছেন, ডোনেশনের টাকা নিজেদের পকেটে ভরেছেন। এইসব মানুষ রুপি পিচাশ গুলোকে চিনে রাখা দরকার। কারণ, প্রতিশোধ নয়, বরং তাদের মানসিকতা সুস্থ করার জন্য।

আরেকটা জিনিস আমাকে সবচেয়ে বেশি আঘাত করেছে—বিভাজন। ছাত্র জনতার আন্দোলন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত, ফেসবুকে যেসব পোস্ট দেখি, অনেকেই ইচ্ছা করে আমাদের মধ্যে বিভেদ ছড়াচ্ছে। কেউ ইচ্ছে করে, আর কেউ না বুঝে, যাচাই না করে। যারা ইচ্ছা করে করে, তাদের নিয়ে বলার কিছু নাই—সমাজে কিছু মানুষ থাকবে যারা মজা পায় এমনটা করে। কিন্তু যারা না বুঝে করে, ভাই আপনারা কেন করেন এসব?

আপনারা একটু অন্য মত পেলেই যাচাই না করে সেটাকে শেয়ার করেন। নিজের চিন্তাশক্তি একটুও ব্যবহার করেন না? একটু সময় নিয়ে দেখেন ফ্যাক্টটা ঠিক আছে কিনা। এসব বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ালে, আপনি বুঝতেও পারবেন না কত বড় ক্ষতি করছেন।

একটা বড় প্রশ্ন এখানে এসে দাঁড়ায়—আমরা যদি নিজেরা সৎ না হই, যদি নিজেরা চিন্তা না করি, তাহলে এই বিভ্রান্তি, এই বিভেদ কবে থামবে? মিথ্যাকে প্রশ্রয় দিয়ে আমরা সমাজের ক্ষতি করছি। আপনি নিজে যদি যাচাই করা শুরু করেন, তাহলে দেখবেন বিভক্তি অনেক কমে যাবে। যারা ইচ্ছে করে বিভেদ ছড়ায়, তারাও আর তেমন মজা পাবে না।

তাই যারা না বুঝে বিভেদ ছড়ান, তাদের বলছি—কিছু শেয়ার করার আগে একটু ভাবুন। যাচাই করুন। ফ্যাক্টগুলো ঠিক আছে কিনা দেখুন। আপনার ছোট্ট একটা ভুল অন্যের মনে অনেক বড় ক্ষতের সৃষ্টি করতে পারে। আমরা যদি একসাথে থেকে এই বিভক্তি কমাতে পারি, সত্যের পক্ষে দাঁড়াই, তাহলে বিভেদ ছড়ানোর আর সুযোগ থাকবে না।

এই সময় আমাদের শিখিয়েছে, আমাদের ঐক্যই আসল শক্তি। আর এই শক্তিকে ধরে রাখতে হলে সবার আগে নিজের চিন্তা ও বিবেকের কাছে সৎ হতে হবে। সঠিক তথ্য ছড়ান, বিভাজন নয়। কারণ আমরা সবাই মিলে একসাথে গড়ে তুলতে পারি এক সুস্থ, সুন্দর বাংলাদেশ।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *